ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা অ্যালামনাই

সোমবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলা বিভাগ পরিচিতি

১৯২১ সালে বাংলা বিভাগ যাত্রা শুরু করেছিলো ‘সংস্কৃত ও বাংলা’ বিভাগ হিসাবে। যে বারোটি বিভাগ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা-কার্যক্রম শুরু করেছিলো, এ বিভাগ তার একটি। ১৯৩৭ সালে বাংলা বিভাগ পৃথক হয়।

বিভাগের আরম্ভকালীন শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং মুহম্মদ শহীদুল্লাহ মতো খ্যাতিমান পণ্ডিতরা । পরে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেছেন সুশীলকুমার দে, মোহিতলাল মজুমদার, আশুতোষ ভট্টাচার্য, মনোমোহন ঘোষ, মুহম্মদ আবদুল হাই, মুনীর চৌধুরী, আহমদ শরীফ প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ।

শুরুতে বিভাগে তিন বছরের স্নাতক সম্মান এবং এক বছরের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু ছিলো। অনেক পরে চার বছরের স্নাতক সম্মান চালু হয়। ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু হয় সেমিস্টার পদ্ধতি এবং লেটার-গ্রেড মূল্যায়ন পদ্ধতি। ১৯৬০ সাল থেকে বিভাগে পিএইচ ডি কর্মসূচি চালু আছে। ১৯৭৬ সালে এম ফিল কর্মসূচি চালু হয়।

১৯২১ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলা বিভাগে আট হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এখন প্রতি বছর গড়ে ১৩২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন দায়িত্বপূর্ণ পদে যোগ দেয়। একটা বড় অংশ কাজ করে বিভিন্ন পর্যায়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হিসেবে। এছাড়া অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি কাজেও উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী কর্মরত।

বিভাগে বর্তমানে ২৫ জন পূর্ণকালীন শিক্ষক, চারজন খ-কালীন অধ্যাপক এবং একজন সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক কর্মরত আছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:২০।

শুরু থেকেই বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ গবেষণাকর্মের জন্য বাংলা বিভাগ বিশেষ সুনাম অর্জন করেছে। এ পর্যন্ত বিভাগ থেকে ১৬০ জনের বেশি গবেষক পিএইচ ডি এবং ৫০ জনের বেশি এম ফিল ডিগ্রি লাভ করেছেন। বিভাগের গবেষণা-জার্নাল ‘সাহিত্য পত্রিকা’ ১৯৫৭ সাল থেকে সুনামের সাথে প্রকাশিত হচ্ছে।

বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী চিন্তার বিকাশ এবং প্রত্যক্ষ আন্দোলন-সংগ্রামে বাংলা বিভাগ বস্তুত কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষত ষাটের দশকের অগ্নিগর্ভ সময়ে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের তৎপরতা ছিল দিক-নির্দেশক। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলা বিভাগের তিনজন শিক্ষক মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী ও আনোয়ার পাশা এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী শহিদ হন। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সামগ্রিকভাবে দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় বাংলা বিভাগ গৌরবময় অবদান রেখে চলেছে।